কম্পিউটার কি? কম্পিউটারের ব্যবহার কি কি?

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক আপনি কি কম্পিউটার কি কম্পিউটারের ব্যবহার কি কি  সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন তাহলে আপনি ঠিক জায়গায় এসেছেন। আজকে আমরা কম্পিউটার কি বা কম্পিউটারের ব্যবহার সম্পর্কে ব্যাপকভাবে আলোচনা করব। কম্পিউটার সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হলে নিচের পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

কম্পিউটার কি?  কম্পিউটারের ব্যবহার  কি



কম্পিউটার শব্দের অর্থ হয়েছে গণনাকারী। নিচে কম্পিউটার সম্পর্কে কম্পিউটারের ব্যবহার  কি কি, কম্পিউটার কি কম্পিউটার কখনো আবিষ্কৃত হয়েছে এই সকল তথ্য সম্পর্কে ব্যাপকভাবে আলোচনা করা হলো।

ভূমিকা

যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে একটি কম্পিউটার তার নিজের জায়গায় অক্ষুন্ন রাখতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে কম্পিউটারে এমন একটা জিনিস যে বিভিন্ন সব জটিল কাজে এর ব্যবহার হয়ে থাকে। মানুষের মস্তিষ্কের থেকেও অধিক দ্রুত গতিতে কাজ করতে পারে এই কম্পিউটার। সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করতে পারে এই কম্পিউটার। কম্পিউটার শব্দের অর্থ হচ্ছে গণনাকারী।


প্রথমদিকে কম্পিউটার কে শুধু গণনা করার জন্যই ব্যবহার করা হতো। তবে প্রথম কার কম্পিউটার আর এখনকার কম্পিউটার অনেক তো হত রয়েছে। যুগের পরিবর্তনের সাথে কম্পিউটারের অনেক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। কম্পিউটারে পরিবর্তনের সাথে সাথে কম্পিউটারের ব্যবহার এবং পরিবর্তন হয়েছে। প্রথমে শুধু গণনা করার জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করা হলেও বর্তমানে তা মহাকাশের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের ব্যবহার করা হয়।

কম্পিউটার আবিষ্কারের ইতিহাস

কম্পিউটার আবিষ্কারের ইতিহাস অনেক। বর্তমান যুগে যে ধরনের কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়েছে প্রাচীন যুগে সে ধরনের কম্পিউটার ব্যবহার করা হতো না। প্রাচীনকালে মানুষ গণনার জন্য ঝিনুক,নূরী পাথর, দড়ির গেট ইত্যাদি ব্যবহার করা হতো। পরবর্তী গণনা করার জন্য বিভিন্ন কৌশল বা যন্ত্র ব্যবহার করা হতো। এ সময় কিছু কিছু যন্ত্র ব্যবহার করা হলেও অ্যাবাকাস নামে একটি যন্ত্র ব্যবহার করা হত। 

ক্রম বিবর্তনের যাত্রা এই কম্পিউটার আবিষ্কারের ইতিহাস অনেক লম্বা।  প্রাচীনকালে ব্যবহৃত এই প্রথম যন্ত্রকেই প্রধানত কম্পিউটার আবিষ্কারের ইতিহাস কিছুই ধরা হয়। আবিষ্কৃত হয় খ্রিস্টপূর্ব আনুমানিক ২৪০০ সালে ব্যাবিলনে। খ্রিস্টপূর্বক ৪৫০ থেকে ৫০০ অব্দে মিসরে বাঁচি না গণনা করার জন্য অ্যাবাকাস নামের কম্পিউটার তৈরি হয়। তারপরে স্কটল্যান্ড এর গণিতবিদ জন নেপিয়ার তার গননা কাজের জন্য ছাপা দাগ কাটাকাটি একটি মেশিন তৈরি করেন ১৬১৭ সালে।

তিনি একটি দন্ড আবিষ্কার করেন এই দন্ড টি জন নেপিয়ারের অস্থি নামে পরিচিত। ১৬৭১ সালের গডফাইড লিব নিজ জার্মানির গণিতবিদ তার প্রেস্কেল এর যন্ত্রের ভিত্তিতে চাকা ও দন্ড ব্যবহার করে গুণভাগের ক্ষমতা সম্পন্ন আরো একটি যান্ত্রিক মেশিন তৈরি করে। উনিশ শতকের শুরুর দিকে একটি যন্ত্রের নির্মাণের ধারণা করে চার্লস ব্যাবেজ। 

তিনি এটার নাম দেন ডিফারেন্স ইঞ্জিন। চার্লস ব্যাবেজ ডিফারেন্স ইঞ্জিন নিয়ে কাজ করার সময় ১৮৩৩ সালে তিনি অ্যানালিটিক্যাল নামে আরো একটি ইঞ্জিন আবিষ্কার করেছিলেন। কিন্তু অর্থের অভাবে তিনি কোনোটির কাজ সঠিকভাবে শেষ করতে পারেননি।


আসলে কম্পিউটার বিজ্ঞানের সত্যিকারের সূচনা করেন না অ্যালান টুরিন প্রথমে তাত্ত্বিক ও পরে ব্যবহারিক গবেষণার মাধ্যমে। তবে বিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে আধুনিক কম্পিউটারের বিকাশ করতে থাকে । আর মাইক্রোপ্রসেসের উদ্ভাবনের ফলে মাইক্রো কম্পিউটারের ব্যাপক বিকাশ করতে থাকে 1971 সালে। তবে কম্পিউটার আবিষ্কারের ইতিহাস সম্পর্কে চার্লস ব্যাবেজের নামই আগে আসে। এভাবেই সময়ের পরিক্রমায় কম্পিউটারের ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।

কম্পিউটারের ব্যবহার কি কি

বর্তমান সময়ে অধিকতর কম্পিউটারের ব্যবহার হচ্ছে। জীবনে অনেক ক্ষেত্রেই কম্পিউটারের ব্যবহার হচ্ছে। আমাদের জীবনের একটা অঙ্গের মতো কম্পিউটার ব্যবহার হয়ে আসছে। বর্তমানে কম্পিউটার কি কি কাজে ব্যবহার হয় তা লিখা শুরু করলে হয়তো শেষ হবেনা। প্রত্যেক মানুষেরই কম্পিউটারের ব্যবহার কি কি জানা উচিত।    যখন এ কম্পিউটারটি আবিষ্কৃত হয় তখন মূলত শুধুমাত্র গণনা কাজের জন্য আবিষ্কৃত হয়েছিল। বর্তমানে দেখা যায় দুনিয়াতে এমন কোন কাজ নেই যে কম্পিউটারের ব্যবহার নেই। বর্তমানে কৃষি ক্ষেত্রেও কম্পিউটার ব্যবহারের ব্যাপকভাবে হয়ে যাচ্ছে।

গণনা কাজঃ দ্রুত গতিতে গণনা করার জন্য কম্পিউটার ব্যবহার হয়।মানুষের মস্তিষ্কের থেকেও দ্রুত গতিতে কম্পিউটার গণনা করো কাজ করে থাকে।

গণিতের জটিল সমস্যাঃ বিভিন্ন সব গাণিতিক জটিল সমস্যা সমাধান করতে কম্পিউটার ব্যবহার হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের গণিত খুব সহজেই সমাধান করতে কম্পিউটার ব্যবহার হয়ে থাকে।

শিক্ষা ক্ষেত্রেঃ বর্তমানে শিক্ষা একটি নিত্য প্রয়োজনীয় পেশাবা কর্ম হয়ে আছে। তাই শিক্ষা ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার অনস্বীকার্য। বিভিন্ন ধরনের অনলাইন ক্লাস,বইপত্র তৈরি, প্রশ্ন তৈরি ইত্যাদি ক্ষেত্র কম্পিউটার ব্যবহার হয়ে থাকে।

চিকিৎসা ক্ষেত্রেঃ চিকিৎসার জন্য যেকোনো রোগ নির্ণয় করতে কম্পিউটার ব্যবহার অতীব গুরুত্বপূর্ণ। যেমন আলট্রাসনোগ্রাফি এক্সরে সিটি স্ক্যান থেকে শুরু করে অপারেশন ছাড়াও পিত্তথলির পাথর অপারেশনের জন্য কম্পিউটারের ব্যবহার অপরিসীম।

গবেষণা ক্ষেত্রেঃ আধুনিক সময় যে কোন বিষয়ের উপর গবেষণা করা হয়। আর এই গবেষণার জন্য কম্পিউটারের ব্যবহার আবশ্যক। বিভিন্ন রকম তথ্য সংগ্রহ সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহার হয়ে থাকে। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা ও তথ্য সঞ্চয় রাখতে কম্পিউটারের অবদান অনেক। এমনকি কি মহাকাশে কি আছে না আছে তা গবেষণার জন্যও কম্পিউটারের ব্যবহার হয়ে থাকে।

বিনোদন ক্ষেত্রেঃ মানুষ অবসর সময় পার করার জন্যও কম্পিউটারে ব্যবহার করে থাকে। যখন বিভিন্ন ধরনের গেম খেলার টিভি দেখা মুভি সহ কিংবা এনিমেশন ও স্পেশাল এফেক্ট জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকি।

ব্যবসা ক্ষেত্রেঃ ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজ দ্রুত করার জন্যই কম্পিউটার ব্যবহার হয়ে থাকে। ব্যবসা-বাণিজ্যের তথ্য আদান-প্রদান ক্ষেত্রেও কম্পিউটারের অবদান অনেক। বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র তৈরি করতে কম্পিউটার প্রয়োজন হয়। অফিসের বিভিন্ন রকম কর্ম পরিচালনায় কম্পিউটারের ব্যাপক ভূমিকা পালন রয়েছে।

কৃষি ক্ষেত্রেঃ কম্পিউটার এমন একটা জিনিস যে যেকোনো কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কৃষি কাজের বিভিন্ন বিভিন্ন ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহার অপরিসীম। ফসলের বিভিন্ন ধরনের জাত উদ্ভাব ফসলের গুণগত মান নির্ধারণ ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে কম্পিউটার ব্যবহার হয়ে আসছে। তাছাড়া ফসলের ওজন মাপতেও কম্পিউটার ব্যবহার হয়ে থাকে। সেই ফসলটিকে বিক্রি করতেও মার্কেটিং করার জন্য কম্পিউটার ব্যবহার হয়ে থাকে।

কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি

প্রাচীন যুগ হতে বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার দেখে আসছি আমরা। তবে আমরা জানি না যে ফোনটা কোন ধরনের কম্পিউটার। কম্পিউটারে কতটি ভাগ রয়েছে। কম্পিউটারে কয়েকটি প্রকারভেদ রয়েছে। গঠন অবশিষ্ট উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
  • এনালগ কম্পিউটার
  • ডিজিটাল কম্পিউটার
  • হাইব্রিড কম্পিউটার
এনালগ কম্পিউটারঃ বৈদ্যুতিক তারের ভোল্টেজ, বায়ুপ্রবাহ ও বায়ুর চাপ পরিবর্তিত হওয়া, গ্যাসীয় তরল পদার্থের পরিমাপ ভৌত পরিমাপ করার জন্য যে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় তাকে এনালগ কম্পিউটার বলে।

ডিজিটাল কম্পিউটারঃ ডিজিটাল কম্পিউটার দ্রুত গতিতে গণনা করতে পারে। অর্থাৎ যে কম্পিউটার বাইনারি সিস্টেমে গণনা কাজ করতে পারে তাকেই বলা হয় ডিজিটাল কম্পিউটার।

হাইব্রিড কম্পিউটারঃ বিভিন্ন ধরনের বড় বড় কাজগুলো করার জন্য হাইব্রিড কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অধিকতর ক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটার কেই বলা হয় হাইব্রিড কম্পিউটার। এই কম্পিউটার বিভিন্ন সব জটিল সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রেই ব্যবহার হয়ে থাকে।

কম্পিউটার তৈরি করতে কি কি প্রয়োজন

বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার পাওয়া যায়। কম্পিউটার তৈরিতে কি কি প্রয়োজন তার সম্পর্কে আমাদের জানা দরকার।  কোনটা দামী কোনটা আবার কম দামি। আবার বিভিন্ন ধরনের ল্যাপটপ ও পাওয়া যায়। তবে কম্পিউটার ও ল্যাপটপ তৈরিতে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয়। একটা কম্পিউটার তৈরি করতে গেলে দেখা যায় যে প্রসেসর প্রয়োজন হয় মাউস প্রয়োজন হয় ইত্যাদি অনেক কিছুই
  • কিবোর্ড
  • মাউস
  • প্রসেসর
  • মাদারবোর্ড
  • র‍্যাম
  • হার্ডডিক্স
  • কেবল
  • ডেক্সটপ
  • পাওয়ার সাপ্লায়ার
  • এসএসডি কার্ড 

জীবিকা নির্বাহী কম্পিউটারের ব্যবহার

জীবিকা নির্বাহী কম্পিউটারের ব্যবহার অনেক অনেক।  এমনও কোন মানুষ আছে যে এই সারাদিন কম্পিউটার নিয়েই থাকে। আবার কম্পিউটার থেকে আয় করে। যেমন কোন কোন মানুষ আছে। কম্পিউটারের মাধ্যমে ব্লগিং করে ইনকাম করে। আবার কেউ কেউ গ্রাফিক্স ডিজাইন করার ইনকাম করে। বিভিন্ন রকম তথ্য সংগ্রহ করে ইন্টারনেটে দিয়েও অনেক রকম ভাবে ইনকাম করা যায়। 

তাছাড়া প্রোগ্রামিং বিভিন্ন ধরনের মুদ্রণ ইমেইল ইত্যাদির মাধ্যমেও অনেক ইনকাম করা যায়। তাছাড়া লেখালেখির মাধ্যমেও ব্যাপকভাবে ইনকাম করা যায়। মানুষ তার কাজের উন্নয়নের জন্য কম্পিউটারকে কাজে লাগায়। তাইতো দিন দিন কম্পিউটারের ব্যবহার বেড়েই চলেছে বেড়েই চলেছে। তাছাড়া ব্যাংকিং জগতে কম্পিউটার এর ব্যবহার তো অপরিসীম।

লেখক এর শেষ মন্তব্য

বর্তমান যুগ কম্পিউটারের যুগ। এই বর্তমান যুগে কম্পিউটার ছাড়া চিন্তা করা অসম্ভব প্রায় । আমরা দেখতে পাচ্ছি যে কোন একটি জটিল কাজ করতে গেলে এই কম্পিউটার ব্যবহার হচ্ছে। বিভিন্ন শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিভিন্ন রকম অফিসে কিংবা মহাকাল গবেষণায় কম্পিউটারে ব্যবহার বেড়ে গেছে। এমন কি দেখা যায় যে কোন খুচরো মুদি দোকানের ভিতরেও কম্পিউটার অন রয়েছে। এই পোস্ট পড়ে আমরা কম্পিউটার কত প্রকার ও কি কি সম্পর্কে জানতে পারলাম। কম্পিউটারের ব্যবহার কি কি, কম্পিউটার তৈরিতে কি কি প্রয়োজন, জীবিকা নির্বাহী কম্পিউটারের ব্যবহার সম্পর্কে জানলাম।  

কম্পিউটার আবিষ্কারের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় চার্লস ব্যাবেজ  ইতিহাসের জনক। বে আমরা উপরে আলোচনা থেকে বলতে পারি যে বর্তমানে কম্পিউটারের ব্যবহার বেড়ে গেছে। কম্পিউটারের প্রয়োজনীয় বেড়ে গেছে। কম্পিউটারের উপরে মানুষ বিশ্বাস আস্থা রাখছে।। সব মিলিয়ে কম্পিউটার আমাদের জীবনের সাথে জড়িয়ে গেছে।


উপরের পোস্টটি পড়ে যদি আপনার কোন উপকার হয় তাহলে আমার ওয়েবসাইটটি সাবস্ক্রাইব করুন লাইক করুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আর কে আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতেকটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url