টিভি দেখার ক্ষতি কর দিক ও উপকার দিক
আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক বিন্দু আপনারা কেমন আছেন আশা করছি ভাল আছেন।আপনি কি টিভি দেখার ক্ষতি করে দিক নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছেন তাহলে আপনি ঠিক জায়গায় এসেছেন। আজকে এই পোস্টে টিভি দেখার ক্ষতিকর উপকার দিক নিয়ে আলোচনা করব। টিভি দেখার ক্ষতিকর ও উপকার সম্পর্কে জানতে নিচের পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
বর্তমান যুগে প্রতিটি মানুষই ব্যস্ত সময় পার করছে। তার মধ্যে অনেকেই কাজের ফাঁকে ফাঁকে টিভি দেখার অভ্যাস করে যাচ্ছে। নিচের এই পোস্টে টিভি দেখার ক্ষতিকর দিক, টিভি দেখার উপকার দিকগুলো আর টিভি দেখার নিয়ম আলোচনা করা হচ্ছে।
ভূমিকা
বর্তমান যুগে দেখা গেছে যে প্রায় প্রতিটি মানুষ টিভি দেখতে পছন্দ করেন। তার মধ্যে অনেকেই জানে না যে দেখার কতটুকু উপকার আর কতটুকু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। শুধু প্রাপ্তবয়স্ক কি মানুষই নয় যাদের বয়স বেড়ে গেছে তারাও টিভি দেখার প্রতি আসক্ত হয় তার পাশাপাশি এখন বাঁচারাও টিভির প্রতি আসক্ত হয়ে যাচ্ছে।অতিরিক্ত টিভি দেখার কারণে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হুমকির মুখে রয়েছে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে হলে নিয়ম মত টিভি দেখতে হবে।
আরো পড়ুনঃ মেদ কমানোর উপায় কি
বর্তমান যুগের প্রায় প্রতিটি ঘরেই টিভি রয়েছে। কিন্তু প্রায় সব ঘরের মানুষই টিভি দেখার ক্ষতিকর দিক ও টিভি দেখার উপকার সম্পর্কে জানে না বা জানলেও মানার চেষ্টা করেনা। সব বয়সই লোকজনের পাশাপাশি মহিলারাও আজকাল টিভির প্রতি ঝুকে পড়েছে। এভাবে আমাদের দেশ বা সমাজ বা বিশ্ব হুমকির মুখে চলে যাচ্ছে। আমাদের এই দেশ বা সমাজকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে নিয়ম মত টিভি দেখতে হবে আর টিভির সঠিক ব্যবহার করতে হবে।
টিভি দেখার ক্ষতিকর দিক
আমরা সবাই মনে করি যে টিভি দেখা মনে হয় যে শুধুই উপকার।এর কোন ক্ষতিকর দিক নেই । টিভি দেখার ক্ষতিকর দিক অনেকগুলো আছে। কিন্তু আমরা কয়জন জানি যে টিভি দেখার অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে । বিজ্ঞানীদের মতে অনেক শিশুরাই টেলিভিশন ছাড়া খাবার খেতে চাই না। টেলিভিশন না দেখলে কান্না থামেনা। বাড়ির অন্যান্য সবাই টেলিভিশন দেখার মাধ্যমে আপনার শিশু বাচ্চাটিও টেলিভিশন দেখার অভ্যাস করে ফেলেছে ।
এখনই আপনার শিশুকে এই অভ্যাসটি থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন। অনেক কিছু আছে শুধু টেলিভিশন দেখার কারণে ঘর থেকে বাইরে বের হতে চাই না বাইরে খেলতে চাই না বাইরে বেড়াতে চায় না বাইরে ঘুরতে চায় না। ভবিষ্যৎকালের জন্যই এই অভ্যাস ভয়ানক। এর ফলে একটি শিশু ঘরের ভিতরে বন্দী থাকে তাই তার মেধাবী কাছে বাধা সৃষ্টি হয়।
বন্দী জীবন যাপন করে তার সৃজনশীলতাই বাধা সৃষ্টি হয়। প্রত্যেকটি মানুষেরই ব্যায়াম করার প্রয়োজন হয় কিন্তু এই টিভি দেখার কারণে ব্যায়াম করার অভ্যাস হারিয়ে যাচ্ছে। এই অতিরিক্ত টিভি দেখার কারণে রোগ বালাই বৃদ্ধি পাচ্ছে মানুষের। ঘরে যোগ বন্দী জীবনযাপন করে হাতে পায়ে ব্যথা,মাথাব্যথা, চোখ ব্যথা চোখ দিয়ে পানি পড়া সহ বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই দেখা যায়।
টিভি দেখাই শিশুদের ক্ষতিকর দিক
শিশুদের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস ও স্ট্রোক সহ বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগের সমস্যায় পড়তে পারে। একটি শিশু যদি দিনে ৪ ঘণ্টার বেশি টিভি দেখার অভ্যাস করে তাহলে তার ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।অতিরিক্ত টিভি দেখার কারণে শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রতি অনাগ্রহ তৈরি হয়। টেলিভিশন দেখার কারণে শিশুরা অল্পতেই বিরক্ত বোধ করে।
আরো পড়ুনঃ স্মূতি শক্তি বাড়ানোর উপায় কি
ঠিকমতো খাবার খেতে চায়না কোন কাজের প্রতি মন ও বসেনা। শিশুর এক ঘন্টা টেলিভিশন দেখার কারণে তার দশ শতাংশ সচেতনতা ও মনোযোগের দক্ষতা কমে যায়। এর থেকে ভয়ানক ব্যাপার হচ্ছে যে -অতিরিক্ত টেলিভিশন দেখার কারণে সকল শিশুরা ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে। অতিরিক্ত টেলিভিশন দেখার কারণে শিশুদের মধ্যে 'স্কেরি ওলাল্ড সিনড্রোম' দেখা দিতে পারে । তাই আপনাদের শিশুকে রক্ষা করতে হলে প্রতিদিন নিয়ম করে টিভি দেখার অভ্যাস।
টিভি দেখার উপকার দিক
টিভি দেখার ক্ষতিকর দিকের পাশাপাশি অনেক উপকার দিক ও আছে। প্রত্যেক জিনিসের একটা ভাল দেখে একটা মন্দ দিক রয়েছে। এখানে টিভি দেখার উপকার দিক অনেক রয়েছে । নিচে টিভি দেখার উপর উপকার দিকগুলি আলোচনা করা হলো
- টিভি দেখার মাধ্যমে আমরা সারা বিশ্বের খবর সম্পর্কে জানতে পারি।
- টিভিতে দেখাবে কোন অনুষ্ঠান একে অন্যের প্রতি সঠিক সদাচরণ করার অনুভূতি যোগায়।
- টিভি দেখার মাধ্যমে দেশের যে কোন প্রান্তের খবর খুব দ্রুত পাওয়া যায়।
- টিভি দেখার মাধ্যমে মানসিক মেধাবিকাশ বৃদ্ধি পায়।
- টিভি দেখার মাধ্যমে একজন মানুষ গোটা দুনিয়া সম্পর্কে ভালো-মন্দ জানতে পারে।
- টিভি দেখার মাধ্যমে অলস সময় খুব সহজেই পার করা যায়।
- টিভি দেখার মাধ্যমে অনেক আনন্দ উপভোগ করা যায়।
- টিভি দেখার মাধ্যমে জীবনের বিভিন্ন রকম চরিত্র নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ পাওয়া যায়।
- টিভিতে গণমাধ্যমের সব ধরনের খবরা খবর পাওয়া যায়।
- সঠিক নিয়মে টিভি দেখলে শরীর স্বাস্থ্য ঠিক থাকে মেধা বিকাশে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে।
- টিভি দেখার মাধ্যমে অলস সময় পার করা যায় এবং তার পাশাপাশি মানসিক চিন্তাভাবনা দূর করার যায়।
- টিভি দেখার মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজন কম হয়।
- টেলিভিশন দেখার মাধ্যমে আপনার মানসিক রোগ খুব সহজেই রোধ করা যায়।
টিভি কেন দেখা উচিত
মানুষ জ্ঞানপিপাসু। মানুষ জ্ঞানের জন্য বিদেশও পাড়ি দিতে চাই।বিভিন্ন রকম ঘটনা, সংবাদ, তথ্যচিত্র এবং শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানার জন্য অনেকেই টিভি দেখে থাকেন। কিছু কিছু মানুষ মানসিক চাপ কমাতে ও দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন রকম চাহিদা কমানোর জন্য টিভি দেখে থাকে। টিভি কেন দেখা উচিত তা হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা।
বিভিন্ন রকম জ্ঞান আহরণের জন্য অনেকে টিভির সামনে বসে থাকে। অনেকে আছে শুধু আনন্দের মাধ্যম খোঁজার জন্যই টিভির সাথে সম্পর্ক রাখে। তাছাড়া বর্তমান যুগে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা সরাসরি টিভিতে লাইভ দেখানো হয়। লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য সংবাদ বিনোদন ও তথ্যের একটি প্রাথমিক উৎস হিসেবে আমরা টেলিভিশনের ব্যবহার করে থাকি।
বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের কুইজ বা শিক্ষা অনুষ্ঠান দেখার জন্য টেলিভিশন ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। তাছাড়া বিভিন্ন রকম নেশা জাতীয় দ্রব্যের থেকে টেলিভিশন দূরে রাখতে সাহায্য করে। টেলিভিশন শুধু সংবাদ নয় একশন ও দেখাতে পারে। তবে বিভিন্ন ধরনের আনন্দ নেওয়ার জন্য হলেও টিভি দেখা উচিত।
টিভি কখন দেখা উচিত
অনেকেই অতিরিক্ত টিভি দেখা দেখে যার স্বাস্থ্যের পক্ষে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে থাকে। সারাদিন টিভি দেখা উচিত নয়। অতিরিক্ত টিভি দেখার ফলে চোখের ক্ষতি হয়। বয়স ভেদে টিভি দেখার নিয়ম আছে। শিশুরা রাতে পড়াশোনা করার পরে টিভি দেখতে পারে কিংবা বিকেলে কিছু সময় টিভি দেখতে পারে। কারণ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ সবাই দিনে ২-৩ ঘন্টা টিভি দেখতে পারে।
তবে অবসর সময় পার করার জন্য অনেক সময় বেশি বেশি যায়। তবে এই টিভি অনেক দূর থেকে দেখতে যাতে তো চোখের কোন সমস্যা না হয়। রাতে অতিরিক্ত টিভি দেখা ঠিক নয়। অনেকেই খাওয়ার সময় টিভি দেখতে পারে বা ভালো করে তোলে। এই অভ্যাস ভালো তবে অতিরিক্ত ভালো না। তাই শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে টিভি কখন দেখা উচিত তা আমাদের জেনে থাকা ভালো।
লেখকদের শেষ মন্তব্য
আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হচ্ছে শিশুরা। আর এই শিশুরা কে যদি ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেই সামান্য টিভি দেখার মাধ্যমে তাহলে আমাদের বিশ্বই হুমকি মুখে চলে যাবে। বিশেষ করে শিশুরা ও মহিলাদের নিয়ম করে টিভি দেখার অভ্যাস করে তুলতে হবে। কিছু না হলেও শিশুদেরও মহিলাদের স্বাস্থ্যের দিকে লক্ষ্য রেখে টিভি দেখার অভ্যাস নিয়ম করে। অতিরিক্ত টিভি দেখার অভ্যাস বাদ দিন। নিয়ম মত জীবন গড়তে সাহায্য করুন। তবে লেখক এর মতে টেলিভিশন দেখতে হবে কিন্তু নিয়ম মত ।
আরো পড়ুনঃ মন খারাপ থাকলে কি করবেন
উপরের পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে বা আপনার যদি কোন উপকার হয় তাহলে আমার ওয়েবসাইটটি লাইক করুন সাবস্ক্রাইব করুন ধন্যবাদ।
আর কে আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতেকটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url