লাইলাতুল কদর নামাজ কিভাবে পড়তে হয়
আসসালামু আলাইকুম। বছরে ১২টি মাসের মধ্যে একটি মাস রমজান। প্রত্যেক বছর রমজান মাসে লাইলাতুল কদরের রাত আসে। আপনি জানতে চেয়েছিলেন যে লাইলাতুল কদর নামাজ কিভাবে পড়তে হয়। আজকে আমরা লাইলাতুল কদর নামাজ কিভাবে পড়তে হয় সেই সম্পর্কে ব্যাপকভাবে আলোচনা করব। লাইলাতুল কদর নামাজ কিভাবে পড়তে হয় এই সম্পর্কে জানতে হলে নিজের পোস্টটি মনোযগ সহকারে পড়তে থাকুন।
ইসলামের দৃষ্টিতে লাইলাতুল কদর অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত। আজকের এই পোস্টে লাইলাতুল কদরের নামাজ কয় রাকাত, লাইলাতুল কদরের হাদিস কি কি, আর লাইলাতুল কদর রাতের আমল কি কি এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
ভূমিকা
লাইলাতুল কদরে এমন একটা রাত অন্যান্য এক হাজার রাতের সমান এর গুণ রয়েছে। এই রাতের অনেক গুনাগুন রয়েছে। প্রত্যেক রমজান মাসে এই রাত আমাদের মাঝে আছে। আমরা অনেকেই জানিনা লাইলাতুল মানে কি বা লাইলা তুল কদর রাত কি ধরনের রাত। মনে করা হয় এই রাত যে পাবে আর সেই রাতকে যদি সঠিক কিভাবে পালন করতে পারে তাহলে তার জীবনের গুনাহ মাফ হয়ে যাবে অথবা সেই সৌভাগ্যশীল মানুষ হবে।
আরো পড়ুনঃ ইফতার ও সেহরির ফজিলত কি
সবার ভাগ্যে এই রাতে জোটে না। এরা তেমনি এমনি এমনি বেশি ইবাদতের রাত হয়নি এর কিছু আলাদা গুণ রয়েছে। প্রত্যেক মুমিন মুসলমানদের উচিত হবে এই মহামান্বিত রাতকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা। এই রাতের আমল কয় রাকাত নামাজ এবং কিভাবে নামাজ পড়তে হয় বা নামাজের গুনি কি কি এই সম্পর্কে জানানো হবে।এই রাতে কি কি করনীয় হবে তা আমাদের জানা উচিত।
লাইলাতুল কদরে করণীয়
অনেকে মনে করে লাইলাতুল রাত শুধু জেগে থাকলেই হয়। কিন্তু না জেগে থাকার পাশাপাশি অনেক ইবাদত করতে হয়। আমরা অনেকেই জানিনা লাইলাতুল কদর করনীয় কি কি থাকে। আসুন জানি লাইলাতুল কদরে বাল লাইলাতুল কদর রাতে আমাদের করণীয় কি কি তা জেনে নেই।
- এই রাতে অধিক পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করা উচিত।
- সূরা ইখলাস বেশি বেশি করে পড়া উচিত।
- এই রাতে অধিকতর তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে হবে।
- তারাবির পর বেতরের নামাজ রেখে দিতে হবে।
- সূরা কদর থেকে সর্বশেষ সূরা নাস পর্যন্ত পড়তে পারেন বেশি করে।
- পিতা মাতার খেদমত করতে পারেন কিছু সময়।
- কিছুই করা যাবে না কারণ রাত্রি শবে কদর হয়ে যেতে পারে। আর শবে কদর হয়ে গেলে আপনি সব থেকে বঞ্চিত হবেন।
- সেহরি খাওয়ার আগে কমপক্ষে দুই রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে হবে।
- লাইলাতুল কদর রাতের একটি দোয়া আছে সেই দোয়াটি বেশি জিকির করতে হবে।
- বেশি বেশি করে নফল ইবাদত করতে হবে।
- রাতের বেলায় যে ১০০ আয়াত কোরআন তেলাওয়াত করবে তাকে সারারাত তাহাজ্জুদ পড়ার সব দিবেন আল্লাহ।
- বেশি বেশি করে দুরুদ পড়তে হবে।
- মসজিদে গেলে বাসা থেকে ওযু করে যেতে হবে। তা তাহলে পুরোপুরি একটি কবুল হজের সব পাওয়া যাবে।
লাইলাতুল কদর জানা যায় না কেন
লাইলাতুল কদর জানা যায় না কেন এই বিষয়ে অনেক গভীরভাবে চিন্তা করা যায়। রাত্রি জাগরনের ক্ষেত্রে অথবা লাইলাতুল কদর খোঁজার ক্ষেত্রে প্রথমে ২৭ রমজানকেই প্রাধান্য দেয়া হতো। কিন্তু আল্লাহ তাআলা পরে রমজানের এস ১০ দিনের বেজর রাত্রিগুলোতে খোঁজ করতে বলেছেন। রমজান মাসে অধিক ইবাদত করানোর ক্ষেত্রে এই শেষ দশদিনের বেজর রাত্রিগুলোতে বেশি বেশি করে ইবাদত করতে বলা হয়েছে।
এর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি ব্যাপকভাবে অর্জিত হয়। মূলত আল্লাহ তাআলা মানুষকে বেশি বেশি ইবাদত করানোর ক্ষেত্রেই বেশি উৎসাহ দেওয়ার ক্ষেত্রেই রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাত্রিগুলোতে লাইলাতুল কদর খুজতে বলেছেন। তবে বলা যায় রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের বেজোড়র রাত্রিগুলোতে একরাত লাইলাতুল কদর হবেই তবে তা সবার অজানা। আবার অনেকে মনে করে যে 27 রমজানে শুধু লাইলাতুল কদর হয় কিন্তু আল্লাহ তা'আলা আমাদের বেশি বেশি ইবাদতের মাধ্যমে লাইলাতুল কদর রাত খুঁজতে বলেছেন।
লাইলাতুল কদরের আমল কি কি
লাইলাতুল কদরের অনেক আমল রয়েছে। এই রাতে পবিত্র কুরআন মাজিদ নাযিল হয়েছে। কদরের রাত হাজার মাস থেকে উত্তম। লাইলাতুল কদরের কিছু কিছু আমল রয়েছে যা আমাদের অজানা। কিছু আমল ও দোয়ার মাধ্যমে এই রাত পালন করা জরুরী।
আরো পড়ুনঃ খেলাধুলার উপকারিতা ও প্রয়োজনীতা কি কি?
- বেশি বেশি করে নফল নামাজ পড়তে হবে।
- মসজিদে ঢুকেই দুই রাকাত নামাজ পড়তে হবে।
- লাইলাতুল কদরের দোয়া বেশি করে পড়তে হবে।
- তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে হবে শেষ রাতে।
- তারাবির নামাজ শেষ করতে হবে।
- বেশি করে দুরুদ শরীফ পড়তে হবে।
- মহান আল্লাহতালার কাছে কিছু চাইতে হবে হবে।
- সেহেরির আগে ভেতরের নামাজ শেষ করতে হবে।
- সম্ভব হলে তো শালা তোর তসবি পড়া।
- সম্ভব হলে তাও আবার নামাজ পড়া।
- সম্ভব হলে সালাতুল হাজত পড়া।
- বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা।
- তাওবা ইস্তেগফার পড়া সাইদুল ইস্তেগফার পড়া,জিকির আজগার করা।
লাইলাতুল কদরের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়
লাইলাতুল কদরের নামাজ বলে সেরকম কোন নামাজ হয় না আমরা অনেকেই লাইলাতুল কদরের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় সেই সম্পর্কে জানিনা। লাইলাতুল কদরের রাতে সালাতুত তসবি নামাজ পড়তে হয় পড়লেও হয় আবার না পড়লেও হয়। তবে লাইলাতুল কদর রাতে তাহাজ্জুদের নামাজ বেশি বেশি করে পড়তে হয়। বেশি করে নকল নামাজ বেশি করে পড়তে হয়। শেষ রাতে বেতরের নামাজ পড়তে হয়।
লাইলাতুল কদরের এক রাতের ইবাদতের কত রাতের সমান
মহামান্বিত রাত লাইলাতুল কদর। সারা বছরের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ রাত হচ্ছে লাইলাতুল কদরের একটি রাত। মর্যাদা পূর্ণ রাত হচ্ছে লাইলাতুল কদর। মর্যাদাপূর্ণ রাত হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। লাইলাতুল কদরের রাতে একটি ইবাদত করলে হাজার মাসের সমান ইবাদতের মর্যাদা পাওয়া যায়। অর্থাৎ একটি রাত হাজার মাসের সমান।
লাইলাতুল কদরের হাদিস
বর্তমান সমাজের দেখা যায় লাইলাতুল কদর সম্পর্কে বিভিন্ন জাল হাদিস বের হয়েছে। আবার দেখা যায় সঠিক কোন হাদিস বের হয়ে এসেছে। তবে লাইলাতুল কদর সম্পর্কে অনেক হাদিস রয়েছে লাইলাতুল কদরের হাদিস নামে পরিচিত।
- লাইলাতুল কদরাত সম্পর্কে আল্লাহ বলেন -আমি একে কদরের রাতে নাযিল করেছি। তুমি কি জানো কদরের রাত কি? কদরের রাত হাজার মাসের থেকেও উত্তম।
- লাইলাতুল কদর সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেন -রমজানের শেষ ১০ দিনে তোমরা কদরের রাত তালাশ করো (মুসলিম)
- হযরত মুহাম্মদ সাঃ আরো বলেন -রমজানের বেজোর শেষের ১০ দিনের রাতগুলোকে তালাশ করো (বুখারি হাদিস)
লেখক এর শেষ মন্তব্য
সাতাশ তম রমজান মানেই ধরা হয় লাইলাতুল কদরের রাত। কিন্তু মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন -তোমরা রমজানের শেষের ১০ দিনের বেজোড় রাত্রিগুলোতে তালাশ করো লাইলাতুল কদর। এই এক রাত্রি সমান হাজার মাসের থেকে উত্তম এ রাত। যেহেতু এই রাতে এতটাই উত্তম বা বরকতময়ী এই রাতে যা যা করণীয় আছে,লাইলাতুল কদর নামাজ কিভাবে পড়তে হয়, লাইলাতুল কদরের আমল কি কি, লাইলাতুল কদরের করণীয় কি নেই এই সম্পর্কে জেনে আমরা লাইলাতুল কদর পালনের চেষ্টা করি । তার পাশাপাশি এই রাতে ব্যাপকভাবে আমল করার চেষ্টা করি এবং তাহাজ্জু নামাজ বেশি বেশি করে পড়ি।
আরো পড়ুনঃ কি কি কারণে সিয়াম ভঙ্গ হয়ে যায়
উপরের পোস্টটি পরে যদি আপনার কোন উপকার হয় তাহলেআ আমার ওয়েবসাইটের লাইক কমেন্ট সাবস্ক্রাইব করুন ধন্যবাদ।
আর কে আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতেকটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url