মধু খাওয়ার উপকারিতা কি কি?

 আসাসালামু আলাইকুম।আপনি কি মধু খাওয়ার উপোকারিতা সম্পর্কে জানতে চাইছেন। তাহলে আপনি ঠিক জাইগায় এসেছেন। এখানে জেনে নিতে পারেন আপনার সেই কাঙ্ক্ষিত তথ্যটি। তাহলে পড়তে থাকুন মধু খাওয়ার উপোকারিতা সম্পর্ক জানতে নিচের তথ্য গুলি।


মধু খাওয়ার উপকারিতা


আরবি ভাষায় মধুপোকা বা মৌমাছি কে 'নাহল' বলা হয়। সাধারন ভাবে বলা যাই মধু হলো লাখ লাখ মৌমাছির কঠোর পরিশ্রমের ফসল। 

ভুমিকা


মৌমাছিরা ফুলে ফুলে বিচরণ করে ফুলের রেনু ও মিস্টি রস সংরহ করে তাদের পাকস্থলীতে রাখে।তার পর সেখানে মৌমাছির মুখ থেকে বের হওয়া লালা মিশ্রিত হয়ে রাসায়নিক জটিল বিক্রিয়ায় এই মধু তৈরী হয়। মধু খাওয়ার  উপকারিতা  অনেক রয়েছে। এই মধু কথা প্রবিত্র কোরআনে উল্লেখ আছে। মধু সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কোরআনে আছে। তার পাশাপাশি হাদিস শরিফে মধুর গুন রোগ নিরাময়ে মধুর গুনাগুন যেমন, সর্দি, কাশি ও স্বরভঙ্গে অন্যান্য রোগে মধু ব্যাবহার  আলোচনা  করা হয়েছে।

পবিত্র কোরআনে মধুর কথা

মধু একটি পবিত্র জীনিস। পবিত্র কোরআনে মধু খাওয়ার  উপকারিতা  অনেক অনেক রয়েছে।আরবি ভাষায় এই মৌমাছি কে নাহল বলা হয়েছে। কোরআনে এই নামে একটি সুরা রয়েছে। এই সুরায় বলা হয়েছে "ইয়াখ্রুজু মিমবুতুনিহা শারাবুম মুখতা লিফুন আলওয়া নুহু ফীহি শিফাউল নিন্নাসি।" অর্থ ঃ" তার পেট থেকে বিভিন্ন ধরনের পানীয় নির্গত হয়,তাতে মানুষের জন্যে রয়েছে প্রতিকার। মধু হচ্ছে খাদ্য উভয়ই । মধু কে বলা হয় বিবরে এলাহি ও তিব্বে নব্বী।"।


মধু সাধারনত তরল ভাবে থাকে তাই এই মধু কে পানীয় বলা যাই। উপাদান ও ঋতুর ভিন্নতার কারনে মধুর রঙ বিভিন্ন রকম হয়। এই কারণে কোন বিশেষ অঞ্চলে কোন বিশেষ ফুল ফলের প্রাচুর্যতা থাকলে সেই এলাকাতে মধুর প্রভাব বেশি পরিলক্ষিত হয়। মধু যেমন বলকারক খাদ্য এবং রসনার জন্য আনন্দ ,তেমনি রোগ ব্যাধির জন্য ফল দায়ক । 

মধুর আরো একটি কাজ করে যে , মধু নিজেও নস্ট হয় না অন্য কোন বস্তু কেউ নস্ট হতে দেয় না। এই কারণে হাজার হাজার বছর ধরে চিকিৎসক গন আলকহোল এর স্থলে মধুর ব্যাব্যহার করে আসছেন। মধু পেট থেকে দূশিত পদার্থ অপসারণ করে থাকে।

মধু সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

মধুতে দুই ধরনের সুগার থাকে গ্লূকোজ ও ফ্রূকটোজ। অব্যশ্য সুক্রোজ ও মালটোজ খুব অল্প পরিমানে রয়েছে। মধু নির্ভেজাল পানীয়। এর শর্করা ঘনক্ত এত বেশি যে এর মধে কোন জীবানু এক ঘন্টার বেশি বেঁচে থাকতে পারে না। এতে ভিটামিন এ, বি, সি, প্রচুর প্রিমানে আছে। অনেক বেশি খাদ্য উপাদান ও রয়েছে।মধুতে কোন কোলস্টেরল নেই।

যে কোন সময় যে কেউ এই মধু খেতে পারে। সুস্থ মানুষ দিনে ২ চা চামুচ মধু অনায়াসে খেতে পারে। বেশি খেতে চাইলে ভাত রুটি আলু কম করে খেয়ে এই মধু খেতে পারেন। তবে পরিমিত পরিমানে খেলে মোটা হবার কনো ভয় নেই।

মধুর খাওয়ার উপোকারিতা

শীতের দিনে মধু খাওয়ার  উপকারিতা  খুবই বেশি। শীতের দিনে অনেকেরই মধু খাওয়ার অভ্যাস আছে। যদি আপনার এই অভ্যাস না থাকে তাহলে আজই জেনে নিন,শীতের মাঝে মধু খাওয়ার কিছু নিয়ম।এই মধু কে প্রকূতির মিস্টি অমূত বলে অভিহিত করা হয়। মধুর মধ্যে ৪৫ টি খাদ্য উপাদান রয়েছে। প্রকূতির কিছু প্রয়োজনীয় পুস্টিতে ভরপুর হওয়ায় এটি দীঘদিন ধরে চিকিৎসা অনুশীলনের একটি অংশ হিসেবে ব্যাব্যহূত হয়।

এটি ক্লান্তি প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে। রক্তের হিমগ্লোবিন গঠনে সহায়তা করে। শ্বাস কস্ট,হিমোগ্লোবিন গঠনে এর জুরি নেই। শীতের ঠান্ডা আবহাওয়ার জন্যে শরীরে উতপান্ন কম হয়। যদি আপনি নিয়মিত মধু খান তবে তা মুহুতেই আপনার শরীরে তাপ ও শক্তি জুগিয়ে আপনাকে রাখবে প্রানবন্ত। আর শীতে হজম শক্তি ও কমে যাই।

অথচ নিয়মিত মধুর খাওয়ার কারনে পেটের অম্লভাব কমে যায়। মধু শীতে পেটের হজম শক্তি ও সচল রাখে। তাই হজম সমস্যা দূর করতে আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রতিদিন মধু খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন কারন মধু খাওয়ার  উপকারিতা  অনেক অনেক।

হাদিস শরিফে মধুর গুনাগুন কি কি

পবিত্র হাদিস শরিফে মধু সম্পর্কে প্রচুর বলা আছে। বিশ্ব নবী হজরত মুহাম্মাদ (সঃ) বলেছেন- যে ব্যাক্তি প্রত্যেক মাসে তিন দিন ভোরে মধু চেটে খাই তার কোন বিপদ হতে পারে না।তিনি আরো বলেন যে মধু এবং কোরআনের মাধ্যেমে তোমাদের চিকিৎসা নেয়া উচিত।মধু সকল পানীয় উপাদানের মধ্যে সর্ব উত্তম।নবিজী নিজে সকাল বেলা খালি পেটে মধুর সরবত পান করতেন।


যারা নিয়মিত ভাবে মধুর শরবত পান করতে পারবে না তাদের জন্য তিনি বলেন- সে ব্যাক্তি মাসে তিন দিন সকাল বেলা মধু চেটে খাবে অই মাসে তার বড় কনো রোগ ব্যাধি হবে না। যে কেহ আরোগ্য কামনা করে , তার ভোরের নাস্তা হিসেবে পানি মিশ্রত মধু পান করে উচিত। যে কোন রোগ থেকে মুক্তি লাভ করতে চাইলে এই মধু পান করতে হবে না হলে কোরআন দ্বারা শেফা নিতে হবে।

রোগ নিরাময়ে মধুর গুনাগুন

রোগ নিরাময়ে মধু কখনো একক ভাবে , আবার কখনো ভেষজ দ্রব্যের সাথে মিশ্রত করে যে কোন রোগের চিকিৎসা হয়ে আসছে। কখনো শরীরের শক্তি বাড়াতে মধু পান বেশ কাজে দেয়। শারিরীক দুর্বলতা রোধ করতে মধু বেশ কাজ করে। তাই রোগ নিরাময়ে মধুর গুনাগুন খুব দরকারি।

সর্দি কাশি ও স্বরভঙ্গে মধু

চায়ের সাথে আদা তার সাথে মধু মিশিয়ে খেলে সর্দির জন্য উপশম হয়। দুই চা চামুচ সমপরিমান মধু ও বাসক পাতার রস মিশিয়ে খেলে সর্দি ও কাশি রোগ সেরে যাই। তুলসী পাতার রস এর সাথে মধু মিশিয়ে খেলেও অল্প সময়ের মধ্যে কাশি দূর হয়। আর এক চা চামচ আদার রস আর এক চা চামচ মধু এক সঙ্গে মিশিয়ে সকাল সন্ধ্যা বেলা খেলে এই সর্দি সহজে দূর করা যাই তার পাশা পাশি খিদে ও পাই।

মধুর সাথে গরম জল দিয়ে গড়্গড়া করলে গলার স্বর চিকন হয়। অনেকের মতে এইটি টনিকের মতো কাজ করে। মরিচ, আমলকি, পিপুল, এর সাথে সমপরিমান মধু মিশ্রিত করে খেলে কফ ও স্বর ভাঙ্গা ভালো হয়।

আমাশয় নিরাময়ে মধু

রক্তমিশ্রিত পায়খানা, সঙ্গে পেট কামড়ানি থাকলে তাকেই আমাশয় বলে। মধু দিয়ে এই রোগ সহজে নিরাময় করা যাই।কচি বেল ও আম গাছের চামরা বা বাকল বাটার সাথে গুড় ও মধু মিশিয়ে খেলে আমাশয় দূর হয়ে যাই।কুল ও বড়ই গাছের ছাল এর সাথে মিশিয়ে মধু খেলে আমাশয় দূর হয়।

রুপ চর্চায় মধু

ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে ,বলি রেখা কমিয়ে ত্বক টান টান করতে মধুর জুরি নেই। কোন ধরনের প্রকিয়া জাত করণ ছাড়াই নির্ভেজাল মধু বেশি উপকারি। ত্বকের নমনীয়তা রক্ষায় মধুর জুরি নেই।মধু খেলে দেহের ত্বক নরম থাকে। ত্বকের কালো দাগ দূর করতে মধু ব্যাব্যহার হয়।বিভিন্ন কারনে ত্বকে দাগ হতে পারে।মুধু দাগ উঠিয়ে ত্বক উজ্জল করতে সহায়তা করে।

মুখের ব্রন দূর করতেও মধুর ব্যাব্যহার হয়। নিয়ম মতো মধু ব্যাব্যহার করলেই মুখের ব্রন সমস্যা দূর হবে। দিন দিন দূষিত হচ্ছে চার পাসের পরিবেশ। আর এই দূষণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ত্বক। গসোলের সময় নিয়ম মতো মধু ব্যাব্যহার করলে এই সমস্যা দূর হতে পারে।রোদে পোড়া ভাব কমাতে মধুর ব্যাব্যহার হয়। মধু ত্বকের গভীরে আদ্রতা ধরে রাখে। 

মধুর সাথে আলোভেরা মিশিয়ে রোদে পুড়ে যাওয়া স্থানে লাগিয়ে কিছু ক্ষণ পর ধুয়ে ফেলতে হবে।আর চুলের রং করতে ও মধুর ব্যাব্যহার হয়ে থাকে। আর পছন্দের সাম্পুর সাথে ১ টেবিল চামুচ মধু মিশিয়ে সাধারণ ভাবে মাথা ও চুলে লাগিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

অন্যান্য রোগে মধু

রোগ নিরাময়ে  মধুর গুনাগুন এর তুলনা হয় না। ডায়রিয়া হলে খয়ের ও দারুচিনির গুড়া সমপরিমান মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে ৩/৪ বার খেলে দ্রুত উপকার পাওয়া যাই।কোস্টোকাঠিন্য থাকলে এক গ্লাস গরম দুধ বা পানিতে ২ চা চামচ মধু মিশিয়ে কয়েক বার খেতে হবে। এই গুলা মধু খাওয়ার  উপকারিতা  ও বটে।

 লেখকের কথা

মধু অধিক উপোকারি একটি খাদ্য বা পানীয়। মধু খাওয়ার  উপকারিতা  অনেক বেশি। এর রোগ নিরাময়ে মধুর গুনাগুন অ অনেক বেশি। মধু অনেক রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে  পাশা পাশি শরীরের সক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। 


উপুরের তথ্য গুলি পড়ে যদি আপনার উপকার হয় তাহলে আমার অয়েবসাইটটি লাইক এবং সাস্ক্রাইব করুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আর কে আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতেকটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url