পানি খাওয়ার সঠিক নিয়ম কি

 পানির অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া কোন প্রানি বেচে থাকতে পারে না। আপনি কি পানি  খাওয়ার  সঠিক নিয়ম সম্পকে জানতে চাচ্ছেন। তাহলে ঠিক এসেছেন। আপনি নিচের লিখা গুলি পড়ে জেনে নিতে পারেন আপনার পানি খাওয়ার  সঠিক নিয়ম সম্পরকে।পানি খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানতে হলে নিচের পোস্টি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।

পানি খাওয়ার সঠিক নিয়ম


আমাদের প্রাত্ত্যাহিক  জীবনের পানির ব্যাবহার  অনেক। মহান আল্লাহ  তা'আলা পানিকে শুধু খাওয়ার  জন্য সৃষ্টি করেন নি।এই পানি কে  জীবনের বিভিন্ন কাজের জন্য সৃষ্টি   করেছেন।

ভূমিকা

নিত্ত প্রয়োজনীয় জিনিস পানি। এই পানি ছাড়া জীবন ধারন অসম্ভব। আল্লাহর নিয়ামত  এর অভাব  নেই। অন্যান্য  সব নিয়ামত  এর মতো পানি ও একটি গুরুত্বপুর্ন নিয়ামত। মহান আল্লাহ  তা'আলা পবিত্র কোরআনে বলেন-"তোমরা যে পানি পান করো সে সম্পর্কে তোমরা  কি চিন্তা করেছ? তোমরা কি মেঘ থেকে নামিয়ে আন, না আমি তা বষর্ন করি? আমি ইচ্ছা করলেই তা লবণাক্ত  করে দিতে পারি। তবু ও কেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না।" (সূরাঃ ওয়াকিয়া, আয়াতঃ ৬৮-৭০)। 

আরো পড়ুনঃ আম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা 

মহান আল্লাহ  তা'আলা  আরো বলেন যে " আমি প্রানবান সব কিছু সৃস্টি করলাম পানি থেকে। তবু ও কি তোমরা ঈমান আনবে না।"(সূরাঃ আম্বিয়া , আয়াত  ৩০)।  অন্ন্য সব কিছুর মতোই পানি খাওয়ার  ও নিয়ম কানুন আছে।যে গুলা আমরা অনেকেই জানি না।

পানি খাওয়ার  সুন্নাত গুলি কি কি

  •  পরিমিত  মাত্রায় পানি পান অনেক রোগের থেকে পরিত্রান পাওয়া যায়। আমরা অনেকেই পানি খাওয়ার সঠিক নিয়ম জানি না। নিচে  পানি খাওয়ার  সুন্নাত  গুলি দেয়া হল-

  •  ডান হাতে পানি খাওয়া সুন্নাত। কারন শয়তান বাম হাত দিয়ে পানি খাই। (সহিহ মুসলিমঃ ২/১৭২)

  •  বসে পানি খাওয়া সুন্নাত। কারন শয়তান দাঁড়িয়ে পাইনি খাই। (সহিহ মুসলিমঃ ২/১৭৩)

  •  পানি খাওয়ার  শুরুতে বিসমিল্লাহ  আর খাওয়ার  পর আলহামদুলিল্লাহ্‌  বলতে হয়।( সুনানে তিরমিজিঃ ২/১০)

  • তিন নিঃশ্বাসে পানি খাওয়া সুন্নাত। আর পানি খাওয়ার সময় নিঃশ্বাস  গ্লাস এর বাইরে ফেলা উচিত। (সহিহ মুসলিম ঃ২/১৭৪)

  •  পানি খাওয়ার সময় গ্লাস এর ভাঙা  অংশের দিক দিয়ে পানি পান না করা। ( সুনানে  আবু দাউদ ঃ ২/১৬৭)

  •  বড় কোন পাত্রে পানি পান না করা। পানি পান করার সময় পানিটা দেখে পান করা।( বুখারি ঃ২/৮৪১)

  • পানি পান করার পর অন্য জনকে দিতে হলে ডাম দিক থেকে দিতে হবে। তার পর সে ও তার ডান দিক থেকে দিতে  হবে। (বুখারি ঃ২/৮৪০)

 রাতে পানি খাওয়ার  সঠিক নিয়ম

রাতে ঘুমানোর  আগে পানি পান করার অনেক উপকারিতা  আছে। রাতে সঠিক সময়ে পানি না খেতে জানলে আবার সমস্যা  হতে পারে। রাতে ঠিক ঘুমানোর  আগে পানি অয়ান করে ঘুমালে  আপনার ঘুমের চক্রকে ব্যাহত করতে পারে। এমনকি জটিল কোন রোগ ও হতে পারে। গবেষকদের মতে  রাতে  ঘুমানোর কমপক্ষে  ২ ঘন্টা আগে পানি বা অন্য কোন তরল পদাথ পান করা উচিত।

আরো পড়ুনঃ পেয়ারা খাবার উপকারিতা

আপনার শরীর যাতে সব ঠিকভাবে কাজ করে সেজন্য আপনাকে সঠিক নিয়মে পানি পান করা উচিত।রাতে পানি পান করলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায় কিন্তু ঘুমের আগে পানি পান করলে  আপনার ঘুম চক্রে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। অনেকেই সারারাত হাইড্রেড থাকার কারণে ঘুমানোর আগেই এক গ্লাস পানি পান করে। এই এক গ্লাস পানি কতটা সাস্থকর তা অনেকই জানি না। 

রাতে ঘুমানোর  আগে পানি খাওয়ার  দুই উপকারিতা

ঘুমানোর  আগে পানি পান করলে  মেজাজ  ঠান্ডা  থাকে। ঘুমানোর  আগে পানি পান না করলে মেজাজের ওপর নেতিবাচক  প্রভাব  ফেলে যা আপনার সার- কাডিয়ান রিদম বা ঘুম জাগরণ  বা দেহে সমস্যা করতে পারে। এই সময় পানি পান করলে হজম শক্তি বেড়ে যায়। আপনার শরীর থেকে দূষিত পদার্থ  বের করে দেয়। 

রাতে ঘামের কারনে আপনার শরীরের অনেক পানি বেরিয়ে যায়। তাই ঘুমানোর  আগে পানি পান করতে হয়। এটি পেট বেথা দূর করতে ও সাহায়তা করে। তাই রাতে ঘুমানোর  আগে পানি পান করার অভ্যাস করতে হবে।

সকালে খালি পেটে পানি খাওয়ার নিয়ম

পানি যে কোন সময় খাওয়া  যায়। পানি ভরা পেটে খাওয়া যায় আবার খালি পেটে ও খাওয়া যায়। তবে সকালে খালি পেটে  দুই থেকে চার গ্লাস পানি পান করা ভালো। যদি সকালে শরীর  চর্চা করেন তবে আপনাকে ১৬ আউন্স পানি পান করতে হবে শুরু করার সময়। আর ব্যায়াম  করার সময় ৪ থেকে ৮ আউন্স পানি পান করতে হবে। আর শরীর  চর্চা করার পর  ১৬ আউন্স পানি পান করতে হবে।

পানি খাওয়ার কারনে ঘুম চ্রক্রে ব্যাঘাত 

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পানি পান করলে ঘুমচক্রে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পানি পান করলে সেই পানি রাতে প্রসাবের বেগ বাড়িয়ে দিতে পারে। সাধারণভাবে রাতে আমাদের পেশাবের আউটপুট কম যায় তাই কমপক্ষে  ছয় থেকে আট ঘণ্টা আরামদায়ক ঘুম হয়। এই ঘুম চক্র ব্যাঘাত ঘটতে পারে রাতে একাধিক গ্লাস পানি পান করলে। 

ঘুম চক্র পরিবর্তন হতে পারে। ঘুমচক্রে ব্যাঘাত আপনার স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে, উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি, ওজন বৃদ্ধি কোলেস্টেরল বৃদ্ধি, সহ যাবতীয় সমস্যা হতে পারে। ২০১৯ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে যারা ছয় ঘন্টার কম ঘুমিয়েছে তাদের স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের সমস্যা ছিল। 

বয়স বাড়ার সাথে সাথে আপনার ঘুম চক্র পরিবর্তন হতে পারে। তাই বয়সের সাথে তাল মিলিয়ে আপনাকে পানি পান করতে হবে। অবশ্যই সঠিক মাপ অনুযায়ী বয়স অনুযায়ী আপনাকে পানি পান করতে হবে। অনেকেই ঘুমের আগেই অধিক পরিমাণে পানি পান করেন এই কারণে আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে আর প্রস্রাবের তাড়না বাড়িয়ে দেয়।

দিনে কতটুকু পানি পান করা উচিত 

সাধারণভাবে বলা যায়, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য দিনে সাত থেকে আট গ্লাস পানি পান করা উচিত। তবে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছে যে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য দিনে দুই লিটার পানি পান করা উচিত। তবে আবহাওয়া ভেদে এর পরিবর্তন ঘটতে পারে। গ্রীষ্মকালে ২ লিটারের বেশি পান করা হতে পারে আবার শীতকালে এই দুই লিটারের কম হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ মধু খাওয়ার উপকারিতা

তারপর বয়স ভেদেও পানি পান করার নিয়ম আছে। তবে প্রাপ্তবয়স্কের মানুষের জন্য দিনের কমপক্ষে ২ লিটার পানি পান করতেই হবে। যদি কেউ শরীরকে সঠিক নিয়মে পরিচালিত করতে চাই তবে কমপক্ষে যেন দিনে দুই লিটার পানি পান করে।

লেখক এর মন্তব্য

পানির অপর নাম জীবন। আমি ছাড়া কোন মানুষ চলতে পারে না পাশাপাশি কোন জীব ও চলতে পারে না বা বেঁচে থাকতে পারে না।জীবনকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে হলে  সঠিক নিয়মে পানি খেতে হবে। যদি পারেন তবে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর সুন্নত মোতাবেক পানি পান করলে খুব ভালো হয়। তবে আমার যেটা মনে হয়, মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর সুন্নত মোতাবেক পানি পান করা উচিত।

উপরের পোস্টটি পড়ে যদি আপনার কোন উপকার হয় তবে আমার ওয়েবসাইটটি সাবস্ক্রাইব করুন ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আর কে আইটি বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতেকটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url